পোস্টগুলি

একটি ইঁদুর এক চাষী

ছবি
একটি ইঁদুর এক চাষীর ঘরে গর্ত করে লুকিয়ে থাকতো একদিন ইঁদুরটি দেখলো চাষী আর তার স্ত্রী থলে থেকে কিছু জিনিস… একটি ইঁদুর এক চাষীর ঘরে গর্ত করে লুকিয়ে থাকতো। একদিন ইঁদুরটি দেখলো চাষী আর তার স্ত্রী থলে থেকে কিছু একটা জিনিস বের করছেন। ইঁদুর ভাবলো থলের ভিতর নিশ্চয়ই কোনো খাবার আছে, তাই সে গুটি গুটি পায়ে এগোলো। এগিয়ে দেখলো সেটা খাওয়ার কিছু নয়, সেটা ছিল একটা ইঁদুর ধরার ফাঁদ। ফাঁদ দেখে ইঁদুর পিছোতে থাকলো। ইঁদুরটি বাড়ির পিছনের এক খোপে থাকা পায়রাকে গিয়ে বলল- জানো আজ বাড়ির মালিক একটা ইঁদুর ধরার ফাঁদ এনেছে। এটা শুনে পায়রা হাসতে থাকলো আর বলল- তাতে আমার কি? আমি কি ওই ফাঁদে পড়তে যাব না কি? নিরাশ হয়ে ইঁদুরটি মুরগীকে গিয়ে এই কথা বলল।   মুরগী ইঁদুরকে হেয় করে বলল- যা ভাই এটা আমার সমস্যা নয়। ইঁদুরটি হাঁপাতে হাঁপাতে মাঠে গিয়ে ছাগলকে শোনালো। ছাগল শুনে হেসে লুটোপুটি আর ঘাস খেতে থাকলো। সেই দিন রাত্রে একটি শব্দ হলো যাতে একটি বিষাক্ত সাপ আটকে গিয়েছিল।অন্ধকারে চাষীর স্ত্রী সাপের লেজকে ইঁদুর ভেবে বের করলো, আর সাপটি তাকে কাঁমড়ে নিল। অবস্থা খারাপ দেখে চাষীটি ওঝাকে ডাকলো। ওঝা তাকে পায়রার জুস খাওয়ানোর পরামর্শ দিল। **পায়র

দৈত্য ও নাপিত – মজার গল্প মোঃ আসাদুজ্জামান — February 14, 2022

ছবি
Dotto and Napith এক গায়ে ছিল এক জন্ম-কুঁড়ে নাপিত। সে ছিল অকর্মার ধাড়ী। কোন কাজে তার মন বসত না। তার কাজ ছিল একটাই। নিজের পুরনো আয়নাখানা আর দু’চারখানা দাতপড়া কাঁকই (চিরুনি) দিয়ে নিত্যক্ষণ নিজের মুখসৌন্দর্য ও চুলের বাহার দেখে পরম সন্তোষ লাভ করা। বাড়িতে তার একমাত্র বুড়া বিধবা মা। তারা গরিব মানুষ, সংসার চলে না। পৈত্রিক পেশায় মন লাগালে সংসারের দুঃখ দূর হয়। কিন্তু ছেলে কাজকর্মের ধারেকাছেও নেই। মা হতাশ হয়, দুঃখ করে। অন্য ভাল ছেলেদের নজির দেখায়। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ছেলে তার স্বভাব থেকে একচুলও নড়ে না। অনেক ভেবেচিন্তে মা ছেলের বিয়ে দেয়। আশা, এতে ছেলের সংসারের মন ফিরবে। কিন্তু কিসের কি! বউ সংসার নাপিতের মন পায় না। সে ব্যস্ত থাকে তার পুরনো অভ্যাস নিয়ে। তাতেই তার দুনিয়ার আনন্দ, নিদারুণ পুলক। খেউরি করার (চুল কাটার) যন্ত্রপাতিতে জং ধরে। একটা জমিতে ধান হয়েছে সেগুলো সে কেটে ঘরে তুলবে তাতেও তার প্রবল অনিচ্ছা। তো, নাপিতের মা অবশেষে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে ছেলেকে ঝটাপেটা করে একদিন। এই বার নাপিতের মনে লাগে। সে ঘর ছেড়ে বেরোয়। একটা কিছু করে অনেক টাকাকড়ি ধনরত্ন কামাতে না পারলে সে আর বাড়িমু

এক কৃষকের একটা গাধা ছিল। গাধাটা একদিন অগভীর কুয়ায় পড়লো।

ছবি
গাধাটা একদিন অগভীর কুয়ায় পড়লো। কিন্তু কুয়াটার গভীরতা গাধার উচ্চতা থেকে বেশি হওয়াতে অবলা প্রাণীটি উঠে আসতে পারছিল না। গাধার ত্রাহি চিৎকারে কৃষক এবং আশপাশের মানুষ ছুটে আসল। কিন্তু ওরাও বুঝে উঠতে পারল না কী করবে।ঘণ্টাখানেকনানাভাবে চেষ্টা করার পরও যখন গাধাকে উপরে তুলে আনা গেল না, কৃষক তখন চিন্তা করল, কুয়াটা আগে থেকেই বিপজ্জনক। বেশ কয়েকটি বাচ্চা কুয়াতে পড়ে বারবার আহত হয়েছে। কুয়াটা এমনিতেই ভরাট করতে হবে, তার উপর গাধাটা অনেক বুড়ো এবং দুর্বল হয়ে গেছে। তাই কৃষক সিদ্ধান্ত নিল গাধাসহ কুয়াটি ভরাট করে ফেলবে।কৃষক সবাইকে ডাক দিয়ে হেল্প করতে বলল। সবাই হাতে বেলচা এবং কোদাল নিয়ে পাশ থেকে মাটি কেটে কুয়াতে ফেলতে লাগল। কিছু মাটির দলা গিয়ে গাধাটির উপরেও পড়ল। ওদের মাটি ফেলা দেখে গাধাটি বুঝতে পারল কি ঘটতে চলেছে, প্রাণীটি ভয়ে-দুঃখে নিরবে কাঁদতে লাগল। কিছুক্ষণ মাটি ফেলার পরে সবাই হঠাৎ চমকে গেল, কারণ গাধাটি অদ্ভুত একটা কাণ্ড করে বসেছে। সবাই যখন গাধার উপরে মাটি ফেলছে, গাধাটি তখন গা-ঝাড়া দিয়ে মাটি নিচে ফেলে দিচ্ছে এবং এক-পা, এক- পা করে ভরাট হওয়া জায়গাতে অবস্থান নিচ্ছে। সবাই এবার দ্রুত গাধার উপরে মাটি ফেলতে শুরু কর

'গোপালের পড়া’ সুকুমার রায়

ছবি
মোঃ আসাদুজ্জামান 'গোপালের পড়া' সুকুমার রায় দুপুরের খাওয়া শেষ হ‌‌ইতেই গোপাল অত্যন্ত ভালোমানুষের মতন মুখ করিয়া দু-একখানা পড়ার ব‌‌ই হাতে ল‌‌ইয়া তিনতলায় চলিল। মামা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কিরে গোপলা, এই দুপুর রোদে কোথায় যাচ্ছিস?” গোপাল বলিল, “তিনতলায় পড়তে যাচ্ছি।” মামা— “পড়বি তো তিনতলায় কেন? এখানে বসে পড় না।” গোপাল— “এখানে লোকজন যাওয়া-আসা করে, ভোলা গোলমাল করে, পড়বার সুবিধা হয় না।” মামা— “আচ্ছা, যা মন দিয়ে পড়গে।” গোপাল চলিয়া গেল, মামাও মনে মনে একটু খুশি হ‌‌ইয়া বলিলেন, “যাক, ছেলেটার পড়াশুনোয় মন আছে।”   এমন সময় ভোলাবাবুর প্রবেশ- বয়স তিন কি চার, সকলের খুব আদুরে। সে আসিয়াই বলিল, “দাদা ক‌‌ই গেল?” মামা বলিলেন, “দাদা এখন তিনতলায় পড়াশুনা করছে, তুমি এইখানে বসে খেলা কর।” ভোলা তৎ‌ক্ষনাৎ‌ মেঝের উপর বসিয়া প্রশ্ন আরম্ভ করিল, ‘দাদা কেন পড়াশুনা করছে, পড়াশুনা করলে কি হয়? কি করে পড়াশুনা করে?’ ইত্যাদি। মামার তখন কাগজ পড়িবার ইচ্ছা, তিনি প্রশ্নের চোটে অস্থির হ‌‌ইয়া শেষটায় বলিলেন, “আচ্ছা ভোলাবাবু, তুমি ভোজিয়ার সঙ্গে খেলা কর গিয়ে, বিকেলে তোমায় লজেঞ্চুস এনে দেব।” ভোলা চলিয়া

দুই বন্ধু ও ভাল্লুক – ঈশপ এর গল্প |

ছবি
একদিন দুই বন্ধু বেরোলো বেড়াতে। যেতে যেতে পথে হঠাৎ ভয়ংকর এক ভালুকের সামনে পড়ল দু জন। দুই বন্ধুর মধ্যে একজন গাছে চড়তে জানত। বিপদ বুঝে তখনই পাশের একটা বড় গাছে চড়ে বসল সে। অন্য বন্ধুটি গাছে চড়তে জানত না, এটা জেনেও বন্ধুর কথা না ভেবে তাকে বিপদের মুখে ফেলে সে নিশ্চিন্তে আত্নরক্ষার ব্যবস্থা করল। অন্য বন্ধুটি বিপদ বুঝে গাছের তলায় মরার মতো পড়ে রইল। কারণ সে জানত ভালুক কখনো মরা মানুষকে আক্রমণ করে না।ভালুকটি তার কাছে আসতেই সে নিঃশ্বাস বন্ধ করে ফেলল। ভালুক তার নাখ-মুখ পরীক্ষা করে যখন বুঝল লোকটি মৃত, চলে গেল। ভালুক চলে যেতেই অন্য বন্ধুটি গাছ থেকে নেমে এসে বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করল, ‘বন্ধু, ভালুক তোমার কানে কানে কী বলে গেল?’বন্ধুর কথা শুনে সে হেসে উত্তর দিল, ‘ভালুক আমার কানে কানে এই উপদেশ দিল, যে বন্ধু বন্ধুর বিপদে তার পাশে থাকে না, ভবিষ্যতে যেন এমন বন্ধুর সঙ্গে আর পথ না চলি।’ উপদেশঃ বিপদেই সত্যিকার বন্ধুর পরিচয় পাওয়া যায়।

কুকুর ও বেড়াল

ছবি
অণুরূপকথা: অমিত কুমার কুণ্ডু অলংকরণ : গোবিন্দ প্রসাদ দেবনাথ গহিন বন। গাছগাছালি বনটাকে অন্ধকার করে রেখেছে। বনের মধ্য দিয়ে চলে গেছে পায়ে চলার পথ। এই পথ ধরে একদল শেয়াল যাচ্ছিল। হুক্কাহুয়া করে ডাকতে ডাকতে। পথের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল একটা কুকুর। কুকুরের সঙ্গে শেয়ালের শত্রুতা আজীবনের । কুকুর শেয়ালের দলটা দেখে তাদের পিছু নিল । কুকুর শেয়াল দেখলেই আক্রমণ করবে এ আর নতুন কী? কিন্তু এই কুকুর শেয়ালের দলের পেছন পেছন এলেও তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল না। কিছুটা দূরে গিয়ে ফিরে এলো। কুকুরকে ফিরে আসতে দেখে একটা বেড়াল মুখ ভ্যাংচে বলল, খুব তো বাহাদুরি দেখাতে শেয়ালের দলের পিছু নিয়েছিলে। এখন আবার ফিরে এলে যে? ভয় পেয়ে গেলে? হা হা হা! ভয় তো পাবেই ভায়া তুমি কি আর সেই জাতের কুকুর। কুকুর দেখেছিলাম আমার মামার বাড়ি। যেমন মোটা, তেমন তেজি। শেয়াল তো দূরের কথা, চোর-ডাকাত পর্যন্ত মামার বাড়ির ত্রিসীমানায় পা রাখত না। শেয়ালের কথা শেষ হলে কুকুর বলল, ফিরে এলাম কি সাধে! ওরা প্রথম প্রথম বোঝেনি, একটা কুকুর একদল শেয়ালকে তাড়া করছে। যখন বুঝতে পারবে তখন কি আমাকে আস্ত রাখবে? আবেগ দিয়ে তো জীবন চলে না? কেন বোকামি করব

প্রহারেণ ধনঞ্জয়' জসীম উদ্দীন

ছবি
 মোঃ আসাদুজ্জামান — February 19, 2022 ' এক কুলীন ব্রাহ্মণ ছিল খুবই গরীব। কোনোরকমে দিন চলে যায়। কোন এক বর্ষাকালে সাত মেয়ের সাত জামাই এসে বসে আছে তার বাড়িতে। বেচারি শ্বশুর আজ বিক্রি করে বউ-এর গয়না, কাল বিক্রি করে পিতলের কলসী। যা মূল্য পায় তাই দিয়ে জামাইদেরকে খাওয়ায়। আষাঢ় মাসের ঘন বর্ষার দিন। দুধে-মাছে খেয়ে জামাইরা আর ফেরার নামও করে না। পাড়ার একজন লোক, গরীব ব্রাহ্মণের অবস্থা দেখে বড়ই দুঃখিত হল। সে এসে শ্বশুরকে বলল, “আপনার জামাইরা যে আজ দশ-বারো দিন ধরে বসে বসে খাচ্ছে, তাদের বাড়ি চলে যেতে বলেন না কেন?” শ্বশুর বলল, “তাহা যদি করি তবে জামাইরা রেগে মেগে বাড়ি গিয়ে আমার মেয়েদের কষ্ট দিবে। সেই জন্যই তো তাদেরকে এতটুকু অযত্ন করতে সাহস পাই না।”   তখন সেই লোকটি শ্বশুরের কানে কানে একটি উপদেশ দিয়ে গেল। পরদিন জামাইদের খাওয়ার সময় পাতে ঘি পড়ল না। তাহা দেখে হরি নামের জামাই রেগে একেবারে অস্থির। সে ভাতের থালা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বলে উঠল, “কি-আজ আমাদের থালায় ঘি পড়ল না, ঘি না খাইয়ে শ্বশুর আমাদেরকে অপমান করলেন। এমন শ্বশুরবাড়ি কে থাকে?” এই বলে সে গাট্টি-বোচকা নিয়ে শ্বশুরবাড়ি হতে চলে গেল।