কুকুর ও বেড়াল

অণুরূপকথা:
অমিত কুমার কুণ্ডু


অলংকরণ : গোবিন্দ প্রসাদ দেবনাথ

গহিন বন। গাছগাছালি বনটাকে অন্ধকার করে রেখেছে। বনের মধ্য দিয়ে চলে গেছে পায়ে চলার পথ। এই পথ ধরে একদল শেয়াল যাচ্ছিল। হুক্কাহুয়া করে ডাকতে ডাকতে। পথের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল একটা কুকুর। কুকুরের সঙ্গে শেয়ালের শত্রুতা আজীবনের । কুকুর শেয়ালের দলটা দেখে তাদের পিছু নিল । কুকুর শেয়াল দেখলেই আক্রমণ করবে এ আর নতুন কী? কিন্তু এই কুকুর শেয়ালের দলের পেছন পেছন এলেও তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল না। কিছুটা দূরে গিয়ে ফিরে এলো।

কুকুরকে ফিরে আসতে দেখে একটা বেড়াল মুখ ভ্যাংচে বলল, খুব তো বাহাদুরি দেখাতে শেয়ালের দলের পিছু নিয়েছিলে।

এখন আবার ফিরে এলে যে? ভয় পেয়ে গেলে? হা হা হা! ভয় তো পাবেই ভায়া তুমি কি আর সেই জাতের কুকুর। কুকুর দেখেছিলাম আমার মামার বাড়ি। যেমন মোটা, তেমন তেজি। শেয়াল তো দূরের কথা, চোর-ডাকাত পর্যন্ত মামার বাড়ির ত্রিসীমানায় পা রাখত না।

শেয়ালের কথা শেষ হলে কুকুর বলল, ফিরে এলাম কি সাধে! ওরা প্রথম প্রথম বোঝেনি, একটা কুকুর একদল শেয়ালকে তাড়া করছে। যখন বুঝতে পারবে তখন কি আমাকে আস্ত রাখবে? আবেগ দিয়ে তো জীবন চলে না? কেন বোকামি করব ভায়া?

কুকুরের কথা শেষ হতে না হতেই বিড়াল ও বাবা গো, ও মা গো, মরে গেলাম গো' বলে লাফিয়ে উঠল। কুকুর তাকিয়ে দেখল বেড়ালটি একটা পিঁপড়ের ঢিবির ওপর দাঁড়িয়ে। পিঁপড়ের দল আচ্ছামতো বেড়ালকে কামড়াচ্ছে।

বেড়ালের অবস্থা দেখে কুকুর মিটমিট করে হেসে সেখান থেকে সরে গেল। আর মনে মনে বলল, বেচারা!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পেটুক – সুকুমার রায়