পোস্টগুলি

মিথ্যেবাদী স্ত্রী ও গরিব কৃষকের গল্প

ছবি
এক দেশে ছিল একটি গ্রাম। সে গ্রামে ছিল একটি পরিবার। পরিবারে স্বামী-স্ত্রী ছাড়া আর কেউ নেই। স্ত্রীর নাম পাচতলেইমা। পাচতলেইমা ছিল খুব অলস। পাশের বাড়ির বউ তাড়ালেইমা ছিল কর্মঠ। তাড়ালেইমার কাজ দেখে সবাই প্রশংসা করত। রাস যাত্রার নাচও সে খুব ভালো জানে। মৃদঙ্গর গমগম ধ্বনিতে তাড়ালেইমাবা বহুবার নেচেছে। শুধু তাই নয়, সে নানার ধরনের চাদর, গামছা, শাড়ি বুনতে পারে।   পাচতলেইমার স্বামী একদিন স্ত্রীকে ডেকে বলল, ওহে গৃহলক্ষ্মী, তোমার মতো একজন তো পাশের বাড়িতেও আছে, ওর কারুকাজ তুমি কি দেখতে পাও না? বাড়িতে অতিথি এলে বসতে দেয়ার মতো কোনো কিছু নেই। অতিথিকে পরতে একটা বড় গামছাও দিতে পারব না। কেউ একজন ঘুমাতে এলে একটি বিছানার চাদরও নেই। এভাবে কী থাকা যায়? তুমি তোমার মায়ের বাড়ি চলে যাও। স্বামীর কথা শুনে পাচতলেইমা ভয় পেয়ে বলল, তুমি আমাকে আলসে ভাবছ? বাচ্চার জ্বালায় কিছুই করতে পারছি না। আচ্ছা, তুলা নিয়ে আস, আমি কি করতে পারি দেখাব। স্বামী কথাটা শুনে খুশি হলো। সে ভাবল, আমার বউ আসলেই কর্মঠ নারী । তাড়ালেইমা তাদের আলাপ শুনল। সেও স্বামীকে বলল, চরকাটা ঠিক করে দাও। স্বামী বলল, ঘরে তুলা নেই। তুলা আনতে হলে কুক

গোপালের সঙ্গে নেপালের বুদ্ধির লড়াই

ছবি
বর্ধমানের রাজসভাতেও এক ভাড় ছিল। নাম তার নেপাল। সে সকলের কাছে বলত গোপালের চাইতে তার বুদ্ধি অনেক বেশি। গোপালকে একবার সামনে পেলে সে তাকে বোজা বানিয়ে দিতে পারে। দৈবক্রমে একসময়ে গোপাল মহারাজের দরবার থেকে বর্ধমান রাজসভায় গিয়ে উপস্থিত। বর্ধমানের রাজা যখন শুনলেন গোপাল এসেছে, তখন তিনি খুশি হয়ে বললেন, তুমি এসেছ, বড় ভালো হয়েছে। আমার ভাড়টি সর্বদাই তোমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এবার প্রমাণ হবে সে বড়, না তুমি বড়। প্রতিযোগিতায় তুমি আমার ভাড়কে বুদ্ধিতে হারাতে পারলে আশাতীত পুরস্কার পাবে। নেপালের সঙ্গে এটে উঠতে পার কিনা দেখি। সে জিতলে সেও পাবে। গোপাল ঈষৎ হেসে বললেন, হুকুম করুন, কি করতে হবে। রাজা বিচারের ভার দিলেন মহামন্ত্রীর উপর। বিজ্ঞ মহামন্ত্রী গোপাল এবং বর্ধমানের ভাড় নেপাল দুজনকে ডেকে বললেন, ‘তোমরা প্রত্যেকেই তিনজন করে লোক সংগ্রহ করবে ও তাদের কাল সকালে রাজসভায় হাজির করবে। ওই তিনজনের ভেতর একজন হবে দরিয়ার এ পারের লোক, একজন ও পারের, আর একজন মাঝ দরিয়ার লোক। আজ্ঞে, বলে গোপাল এবং বর্ধমানের ভাড় নেপাল দুজনেই বিদায় নিলেন। নেপাল ভাবল এবার আমি গোপালকে ঠকাবই ঠকাব, সে মুচকি হেসে নাচতে নাচতে বিদায়

বোকা কুমির ও শিয়ালের গল্প

ছবি
কুমির আর শিয়াল মিলে চাষ করতে গেলো। তবে কিসের চাষ করা যায়, তাই ভাবতে লাগলো দুজন। হঠাৎ মাথায় এলো আলুর চাষের কথা। তবে এখানে কুমির এক ফন্দি আটলো। আলু হয় মাটির নীচে। তার গাছ থাকে মাটির উপরে, তা দিয়ে কোনো কাজ হয় না। এটা বোকা কুমির জানতোই না। সে ভাবলে বুঝি আলু তার গাছের ফল। তাই সে শিয়ালকে ঠকানোর জন্য বলল, গাছের আগার দিকটা আমার, আর গোড়ার দিক তোমার। শুনে শিয়াল হেসে বললে, আচ্ছা তাই হবে। এরপর যখন আলু হলো, কুমির তখন সব গাছের আগা কেটে তার বাড়িতে নিয়ে এল। এনে দেখে, তাতে একটিও আলু নেই। তখন সে মাঠে গিয়ে দেখল, শিয়াল মাটি খুঁড়ে সব আলু তুলে নিয়ে গেছে। কুমির ভাবলে, তাই তো। এবার বড্ড ঠকে গিয়েছি। আচ্ছা, আসছে বার দেখব! তারপরের বার হল ধানের চাষ। এবার কুমির মনে মনে ভেবেছে, আর কিছুতেই ঠকা যাবে না। তাই সে আগে থাকেই শিয়ালকে বললো, ভাই, এবারে আমি আগার দিক নেব না, এবার আমাকে গোড়ার দিক দিতে হবে। শুনে শিয়াল হেসে বললে, আচ্ছা তাই হবে! তারপর যখন ধান হল, শিয়াল ধানসহ গাছের আগা কেটে নিয়ে গেল। কুমির তো এবারে ভারি খুশি। সে মনে মনে ভাবছে আর হাসছে যে, মাটি খুঁড়ে সব ধান তুলে নেবে। কিন্তু মাটি খুঁড়ে দেখে সেখানে কিছুই নে

একজন কৃষক

ছবি
এক গ্রামে একজন কৃষক ছিলেন। তিনি দুধ থেকে দই ও মাখন তৈরি করে বিক্রি করতেন। একদিন কৃষকের স্ত্রী মাখন তৈরি করে কৃষককে বিক্রি করতে দিলেন। এরপর কৃষক তা বিক্রি করার জন্য গ্রাম থেকে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। মাখন গুলো গোল-গোল রোল আকৃতিতে রাখা ছিল। যার প্রত্যেকটির ওজন ছিল ১ কেজি করে। শহরে পৌঁছে কৃষক প্রতিবারের ন্যায় পূর্ব নির্ধারিত দোকানে মাখন গুলো দিয়ে পরিবর্তে চা, চিনি, তেল ও তার সংসারের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিয়ে আসতেন।

শিকারি ও বুদ্ধিমান পাখি

ছবি
একবার এক শিকারি ছোট্ট একটি পাখি ধরে ফেলল। পাখিটি খুব বুদ্ধিমান ছিল। পাখিটি শিকারির খুব প্রশংসা করতে লাগল যে, তুমি এতবড় শিকারি! জীবনে অনেক বাঘ মেরেছ, অনেক ভাল্লুক মেরেছ, এই করেছ, সেই করেছ। আমি একটা ছোট্ট পাখি, আমার ওজন ১০০ গ্রামও না, আমাকে খেয়ে তুমি কী করবে? আমাকে খেলে তো তোমার পেটের একটা কোনাও ভরবে না। তার চেয়ে বরং আমাকে ছেড়ে দাও। তোমাকে এমন তিনটি মূল্যবান বাণী শোনাব যা তোমার সারাজীবন কাজে লাগবে। এমনভাবে সে কথাবার্তা বলছিল যে শিকারির মন গলে গেল। কারণ তেল পেতে সবাই পছন্দ করে। আরেকজনকে গলানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে তেল। সে ভেবে দেখল, ঠিকই তো। এত ছোট পাখি খেয়ে কোনো লাভ নেই। তার চেয়ে শুনি, পাখিটা কী বলতে চায়। হয়তো এতে আমার লাভ বেশি হবে।

ও শিয়ালের ঝগড়া !

ছবি
একদা বনের মধ্যে একটা গাধা এবং একটি শিয়াল ঝগড়া শুরু করলো !!! গাধা বললো… “ঘাস হলুদ”!!! শিয়াল বললো.. “না, ঘাস সবুজ”!!! না হলুদ… না সবুজ… এভাবে তাদের ঝগড়া চরম আকার ধারন করলো। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে তারা বিচারের জন্য বনের রাজা সিংহের কাছে গেলো। সিংহ সব শুনে শিয়ালকে পুরো একমাস বন্দী রাখার এবং গাধাকে ছেড়ে দেয়ার আদেশ দিলো। শিয়াল- সিংহকে প্রশ্ন করলো…. এটা কি আপনার ন্যায়বিচার? ঘাস কি সবুজ নয়???

জুতার গল্প

ছবি
জুতার গল্প অমিত কুমার কুণ্ডু ১৬ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ অঙ্কন : প্রসূন অনেক দিন আগের কথা। এক দেশে সন্দেশ নামে এক রাজা ছিলেন। লোকমুখে শোনা যায়, রাজা ছোটবেলায় খুব সন্দেশ খেতে ভালোবাসতেন। সেই থেকে রাজার রাজকীয় নাম বদল হয়ে রাজ্যময় ছড়িয়ে গেল সন্দেশ নামটা। রাজার নাম সন্দেশ হলে কী হবে? রাজার আচরণে কোনো মিষ্টতা নেই। রাজা যেমন বোকা, তেমনি গোঁয়ার, তেমনি মূর্খ ও খামখেয়ালি। মনে কোনো দয়ামায়া নেই। মাথায় কোনো বুদ্ধিশুদ্ধিও কম। রাজ্যের সবাই তাঁর ভয়ে কাঁপে। রাজা কখন যে কী করবেন, তা কেউ আঁচ করতে পারে না। হঠাৎ হঠাৎ এমন সব কাজ করে বসেন, তা নিয়ে সভাসদদের এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে হয়। কখনো তিনি গায়কদের গান শোনাতে ডেকে আনেন। দিনের পর দিন চলে গানের আসর। কখনো পালোয়ানদের ধরে আনেন। তাদের নিয়ে চলে কুস্তি প্রতিযোগিতা। কখনো তেজি ষাঁড় ধরে আনেন। চলে ষাঁড়ের লড়াই। আবার কখনো সদলবলে ঘুরতে যান দূরে কোথাও। কী এক খেয়ালে একদিন রাজার মনে হলো, গহিন বনে শিকার করতে যাবেন। সঙ্গে সঙ্গে পাইক-পেয়াদা নিয়ে সদলবলে বনের পথে রওনা দিলেন। কত ঘোড়া, কত আয়োজন, কত মানুষজন তার কোনো গোনা-গুনতি নেই। রাজা যেতে যেতে শহরের শেষ মাথায় এসে পড়লেন। হঠাৎ কিছু ঝুপ